Rabindranath Tagore: অবাক হবেন জানলে, রবীন্দ্রনাথের বংশের আসল পদবী ‘ঠাকুর’ নয়! কী ছিল তবে?
Rabindranath Tagore: বাংলা সাহিত্য যাকে ছাড়া অসম্পূর্ণ তিনি হলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবি ঠাকুর হলেন প্রথম নোবেল জয়ী বাঙালি। এমনকি সমগ্র এশিয়া মহাদেশের প্রথম নোবেল জয়ী কবিও ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
বাংলা সাহিত্যের প্রতিটা ক্ষেত্রেই রবি ঠাকুরের অবদান অনস্বীকার্য। কবিতা, চিত্র, প্রবন্ধ, উপন্যাস, সাহিত্য, ছোটগল্প ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি নিজের অবদান রেখেছেন। এছাড়াও কবিগুরু ছিলেন একজন সঙ্গীতজ্ঞ, সুরকার এবং দার্শনিক। তাই কবিগুরুকে ছাড়া বাংলা সাহিত্য ভাবাই যায় না।
কলকাতায় জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে ২৫ শে বৈশাখ জন্মগ্রহণ করেছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বর্তমান সময়ে রাজ্যের নানা প্রান্তে প্রতিবছর এই পঁচিশে বৈশাখ মহাসাড়ম্বরে পালন করা হয়। নাচ, গান, নাটক, আবৃত্তি, অংকন ইত্যাদি উৎসর্গ করা হয় কবির চরণে।
কবিগুরুর কিংবদন্তি সৃষ্টি আজও বাঙালি তথা সমগ্র ভারতবাসীর কাছে একইভাবে প্রাসঙ্গিক। মানুষের নানা প্রকার আবেগ-অনুভূতি, অভিব্যক্তি ইত্যাদির প্রকাশ ঘটেছে কবিগুরুর লেখনীতে। তাই কবিগুরুর জন্মবার্ষিকী বাঙালির কাছে একটি আবেগের উৎসব।কারণ কবিগুরুর সৃষ্টিতেই যে লুকিয়ে আছে বাঙালির সমস্ত অনুভূতির মুক্তি।
কিন্তু আপনি কি জানেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে পরিবারে জন্মেছিলেন, সেই পরিবারের আসল পদবী কিন্তু ঠাকুর ছিল না। এবারই তাহলে প্রশ্ন আসবে যে ঠাকুর পরিবারের আসল পদবী যদি ঠাকুর না হয়, তবে আসল পদবী কি ছিল?
আপনারা জেনে অবাক হবেন ঠাকুর পরিবারের আসল পদবী ছিল কুশারি। তাহলে এই কুশারি থেকে কেন তারা ঠাকুর হলেন? আর কিভাবেই বা হলেন ?আজকের প্রতিবেদনটি এই সম্পর্কেই।
বহু বছর আগে প্রায় দেড় শতক ধরে নানা প্রকার ধর্মীয় লাঞ্ছনা এবং অপমান সহ্য করার পর এবং দীর্ঘদিন ধরে দরিদ্র মানুষের সেবা করে কুশারি বংশ হয়ে ওঠে ঠাকুর বংশ।
প্রচলিত আছে, এক বিশেষ মাংসের গন্ধ শুঁকে সমাজে কলঙ্কিত হয়ে উঠেছিল সুন্দরবন অঞ্চলের চার ব্রাহ্মণ জমিদার ভাই – রতিদেব কুশারী, কামদেব কুশারি শুকদেব কুশারি এবং জয়দেব কুশারি।এই কুশারিদের পরবর্তী বংশধর ছিলেন জগন্নাথ কুশারি। জগন্নাথ কুশানির বংশধর রামানন্দের মহেশ্বর আর সুখদেব নামে দুই পুত্র ছিল। সেই দুই পুত্র গোবিন্দপুরে দরিদ্রদের সেবা করে, প্রচুর দান ধ্যান করে সেখানকার মানুষের মনের দেবতা হয়ে উঠেছিলেন। তখন থেকেই তারা হয়ে ওঠেন দরিদ্রের ঠাকুর। আর এই ভাবেই কুশারি পদবী ত্যাগ করে গোবিন্দপুরে এসে কুশারি বংশধরেরা ঠাকুর পদবীটিকেই নিজেদের আপন করে নেন এবং পরবর্তীতে তাদের প্রতিটি বংশধর এই পূর্বজদের অনুসরণ করে ঠাকুর পদবীটি ব্যবহার করতে আরম্ভ করেন।
পরবর্তীতে এই কুশারি তথা ঠাকুর বংশের এক বংশধর নীলমণি সেই সময় জোড়া বাগান অঞ্চলের প্রখ্যাত ধ্বনি ব্যবসায়ী বৈষ্ণবচরণ শেঠেরর ঘনিষ্ঠতম বন্ধুতে পরিণত হন। বৈষ্ণবচরণ শেঠ নীলমণিকে জোড়াসাঁকোতে দেড় বিঘা জমি উপহার দিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন যেন তার পরম বন্ধু সেই জোড়াসাঁকোতেই বাড়ি করে বসবাস করেন। এর পরেই সেই জোড়াসাঁকোতে গড়ে ওঠে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি যা বর্তমানের “রবির আলোয় উদ্ভাসিত” হিসেবে বিখ্যাত।